সোনার বাংলাদেশ
হবিগঞ্জে কলেজছাত্রকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন: ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হবিগঞ্জের বাহুবলে খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বৃন্দাবন সরকারি কলেজছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে প্রেমিকসহ ১০ জনকে আসামি করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি ওই কলেজছাত্রের প্রেমিকা লিজার মা লিপি আক্তার।
সোমবার বিকালে নির্যাতিত ফয়সলের মা রাবিয়া খাতুন বাদী হয়ে বাহুবল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাহুবল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
স্থানীয়রা জানান, জেলার চুনারুঘাট উপজেলার হাসেরগাও গ্রামের আহসান উল্ল্যার ছেলে বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অনার্স (গণিত বিভাগ) ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সল মিয়ার সঙ্গে বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের কন্যা মাহফুজা আক্তার লিজার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) রাতে প্রেমিকার বাড়িতে গেলে তার স্বজনরা চোর আখ্যা দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রেমিক ফয়সলের ওপর নির্যাতন চলায়। তবে ফয়সলের পরিবারের অভিযোগ তাকে দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেমিকার বাড়ির স্বজনরা ফয়সলকে নির্যাতন করছে। এ সময় তিনি বাঁচতে আকুতি মিনতি করছেন। তবে তাকে কোনও দয়া করা হয়নি।
খবর পেয়ে বাহুবল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফুয়াদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রেমিক ফয়সলের বাড়িতে খবর দিয়ে তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে স্বজনরা তাকে চিকিৎসার জন্য শনিবার (৩১ অক্টোবর) হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে চিকিৎসকরা তাকে দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রবিবার (১ নভেম্বর) বিকালে তাকে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে, ফেসুবুকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর টনক পড়ে পুলিশ প্রশাসনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া গ্রামের মূল অভিযুক্ত সালা উদ্দিন (৫২) ও মঈন উদ্দিনকে (৪০) আটক করে। সন্ধ্যায় তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাহুবল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও জানান, পুলিশ ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে। তাদেরকে করাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও শিগগিরই আটক করা হবে।