আমাদের কমিউনিটিএডিটর্স পিকসটপ স্টোরিজসোনার বাংলাদেশ
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে সিলেটের রাজনীতিতে কেন এত আলোড়ন

ইব্রাহিম খলিল :
প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট নগরীর নির্বাচনের আগেই কোন সম্ভাব্য প্রার্থী দেশে বিদেশে প্রচারনায় নজর কেড়েছেন তেমনটি সচরাচর দেখা যায়না। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিক আনোয়ারুজ্জামানের প্রার্থীতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে দারুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ভিশনারী এবং স্মার্ট। চিন্তায় আধুনিক, তারুন্য নির্ভর এবং আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। যিনি ২৪ ঘন্টা ডুবে থাকেন রাজনীতিতে। দারুন জানাশুনা আছে তার দেশ বিদেশের উন্নয়ন ও আধুনিকতায়। রাজনীতিতে তিনি বড় পদে নেই, কিন্তু প্রভাবশালী। মন্ত্রী- এমপি হতে পারেননি, তারপরও প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দেশে বিদেশে তার তুমুল পরিচিতি ও সুখ্যাতি। প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট সিটি কর্পোরেশনে উন্নয়নে এমন একজন প্রতিনিধি এখন সময়ের দাবী এমন কথা অনেক প্রবাসীর মুখে মুখে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই সিলেট-২ আসনে প্রার্থী হতে তৎপর থাকলেও দলীয় মনোনয়ন জুটেনি। তারপরও বসে থাকেননি তিনি। জাতীয় সংসদ থেকে স্থানীয় সরকার সব নির্বাচনকালে ছুটে এসেছেন দেশে। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে সরব থাকতে দেখা গেছে তাকে। বিশেষ করে সিলেট-১ ও সিলেট-৩ আসন, সিলেট জেলা পরিষদ ও ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয়প্রার্থীর বিজয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিতে দিনরাত খেটেছেন তিনি। এ কারণে শুধু বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরেই নয়, সিলেট সদর ও সিলেট সিটি করপোরেশন এবং ফেঞ্চুগঞ্জে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে তাঁর।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন এখন দ্রুত বিকাশমান একটি শহর। দেশের যে কয়েকটি সিটি কর্পোরেশন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন সিটি হিসেবে গন্য করা হয় সিলেটকে। সিলেট সিটি এখন ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকাকে ঘিরে রয়েছে সরকারের মেঘা পরিকল্পনা। একটি স্মাট সিটি গড়ে তুলতে চায় বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার। সরকারের এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, আগামী কয়েক বছরে আমূল পরিবর্তন হবে সিলেটে।
” আমার খুবই কষ্ট হয় যে কারণে, আধ্যাত্মিক ও পরিচ্ছন্ন এই নগরী এখন ধুলা বালির শহরে রুপ নিয়েছে। জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, উন্নয়নের নামে কিছু আর্টিফিশিয়াল প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে অথচ এর থেকে জনগন খুব একটা সুফল পাচ্ছেনা। জানজট, মশার সীমাহীন উপদ্রব তো অগের মতোই। বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত মেয়র হওয়া সত্বেও, সরকার উন্নয়নের ব্যাপারে যে আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছিলো তা কাজে লাগাতে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছেন বর্তমান মেয়র ‘‘ বলছিলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
আনোয়ার চৌধুরী একজন ক্লীন ইমেজের রাজনীবিদ। ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। কলেজ জীবনে তিনি বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন তিনি। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখানে গিয়েও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী থেমে থাকেননি। সেখানে প্রথমে তিনি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে দলের মধ্যে একজন সম্ভাবনাময় উদীয়মান তারকা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
” আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী খুব ক্যারিশম্যাটিক একজন নেতা, তিনি দলের নেতাকর্মীদের হৃদস্পন্দন বুঝতে পারেন, বিশেষ করে জনগনের আশা-আকাঙ্ক্ষার, তাদের অনুভবের জায়গাটা তিনি বুঝতে পারেন”, বলছেন প্রবাসী সাংবাদিক ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ সাদেক আহমেদ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ৪০ শতাংশই প্রবাসী । যারা বিশে^র বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন। ভোটের রাজনীতিতে তারাও গুরুত্বপূর্ণ। সিটি কর্পোরেশনের রাজনীতিতে প্রবাসীরাও খুবই সক্রিয়।
সৈয়দ সাদেক মনে করেন, প্রবাসীদের সমর্থনও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
” প্রবাসীর শহরে, প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্বশীল একজন মেয়র দরকার”, বলছিলেন লন্ডন থেকে বাংলাদেশী স্থায়ী হওয়া, নগরীর জালালাবাদ এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন।
” আমার নিজের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমার ধ্যানে জ্ঞানে ও মননে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করার বাসনা। সে প্রেক্ষিতে আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি মেয়র পদে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমার প্রত্যাশা সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন, স্মার্ট ও আধুনিক মডেল সিটি গড়া তোলা। আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব ও নাগরিক সেবার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে গড়ে তুলতে চাই”, বলছিলেন তিনি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের পূর্বের আয়তন ছিল মাত্র ২৬.৫০ বর্গকিলোমিটার যা সম্প্রসারণে পর মোট আয়তন হয়েছে ৫৯.৫০ বর্গ কিলোমিটার। নতুনভাবে যুক্ত ৩৩ বর্গ কিলোমিটারের জন্য সিটি করপোরেশনের কাজের পরিধি ও ব্যপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাথে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২৮টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটিই নতুন চ্যালেঞ্জ।
লেখক :
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক